PSC Clerk Previous Year Bengali Precis/বাংলা সারাংশ [Pdf] Download (1998 - 2006)
Hello,
বন্ধুরা পিএসসি রেজাল্ট প্রকাশ হয়ে গেছে,যারা যারা পাস করেছো তাদের কে অনেক অনেক অভিনন্দন। Part - 2 পরীক্ষা সামনেই আসতে চলছে, Part-2 exam এর তাই প্রস্তুতি শুরু হোক এখন থেকেই।
www.jobguidee.com তাই আজ নিয়ে এসেছে তোমাদের জন্য বিগত বছরের PSC Clerk মেন পরীক্ষার সমস্ত Previous Year Bengali Precis/ বাংলা সারাংশ লিখন এর Pdf (১৯৯৮ -২০০৯ ) । যেহেতু Precis mains exam এর জন্য Important,তাই প্র্যাকটিস করার কিন্তু খুব প্রয়োজন। তবে আর দেরি কেন এখনই Precis গুলো দেখে নাও কেমন এসেছিল আর যদি ডাউনলোড করতে চাও তবে নীচের লিংকে ক্লিক করে সংগ্রহ করে দেখে নাও ।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
1) আমরা বলি নিউটন মধ্যাকর্ষণ আবিষ্কার করেছেন। মধ্যাকর্ষণ কি ওর জন্যে এক কোণে অপেক্ষা করছিল ? ছিল ওর মনে, উপযুক্ত সময়ে সেটা জানতে পারলেন। পৃথিবী যা কিছু জ্ঞানলাভ করেছে,সব মন থেকে উৎপন্ন; জগতের অনন্ত গ্রন্থাগার তোমার মনেই রয়েছে। বাহিরের জগৎ শুধু তোমার মনকে পর্যবেক্ষণ করার উদ্দীপনা জোগায়,কিন্তু তোমার পর্যবেক্ষণের বিষয় হল তোমার মন একটি আপেল পড়ার ঘটনা নিউটনকে উদ্দীপ্ত করল,তিনি নিজের মনে আলোচনা করলেন। মনে মনে চিন্তার সব পূর্বতন সূত্রগুলিকে সাজিয়ে নিয়ে তাদের মধ্যে এক নতুন সম্বন্ধ আবিষ্কার করলেন, তাকেই আমরা বলি মধ্যাকর্ষণের সূত্র। সে সূত্র আপেলে ছিল না,পৃথিবীর কেন্দ্রে কোন বস্তুতে ছিল না। অতৈব অধিভৌতিক বা আধ্যাত্মিক সব জ্ঞানই মানুষের মনে রয়েছে অনেক ক্ষেত্রে তা আবিষ্কৃত হয় না, আবৃত থেকে যায়,আবরণ যখন ধীরে ধীরে উন্মোচিত হয় তখন আমরা বলি, 'আমরা শিখছি'। এই উন্মোচনের অগ্রগতির উপরেই জ্ঞানের অগ্রগতি নির্ভর করে। ( PSC Clerk - 1998)
সারাংশ : মহান আবিস্কারক বিজ্ঞানী নিউটনের মধ্যেই মধ্যাকর্ষণ শক্তি নিহিত ছিল। বাইরের জগৎ শুধু মনকে পর্যবেক্ষণ করতে উদ্দীপিত করেছিল। মানুষের মনের অন্তরেই আবিষ্কার,সৃষ্টি,জ্ঞান সব কিছু অবস্থান করে, বাইরের নানা আবরণ তাকে আবৃত্ত করে। বাইরের আবরণ অপসারিত হলেই জ্ঞানের প্রকাশ ঘটে। জ্ঞানের এই প্রকাশ ও বিকাশই প্রকৃত শিক্ষা এবং আবিষ্কার
2) জন্তুরা আহার পায় বাঁচে, আঘাত পায় মরে,যেটাকে পায় সেটাকেই বিনা তর্কে মেনে নেয়। কিন্তু মানুষের সবচেয়ে বড়ো স্বভাব হচ্ছে মেনে না নেওয়া। জন্তুরা বিদ্রোহী নয়, মানুষ বিদ্রোহী। বাইরে থেকে যা ঘটে,যাতে তাঁর নিজের কোনো হাত নেই, কোনো সায় নেই, সেই ঘটনাকে মানুষ একেবারে চূড়ান্ত বলে স্বীকার করেনি বলেই জীবের ইতিহাসে সে আজ এত বড়ো গৌরবের পদ দখল করে বসেছে। আসল কথা, মানুষ একেবারেই ভালো মানুষ নয়। ইতিহাসে আদিকাল থেকে মানুষ বলেছে, বিশ্বঘটনার উপর সে কর্তৃত্ব করবে । কেমন করে করবে ? না, ঘটনার পিছনে যে প্রেরণা আছে, যার থেকে ঘটনাগুলো বেরিয়ে এসেছে, তারই সঙ্গে কোনোমতে যদি রফা করতে বা তাকে বাধ্য করতে পারে, তা হলেই সে আর ঘটনার দলে থাকবে না,ঘটয়িতার দলে গিয়ে ভর্তি হবে। সাধনা আরম্ভ করলে মন্ত্রতন্ত্র নিয়ে। গোড়ায় তার বিশ্বাস ছিল,জগতে যা কিছু ঘটছে এ সমস্তই একটা জাদুশক্তির জোরে। সেই জাদুমন্ত্রের সাধনায় মানুষ সে চেষ্টা শুরু করেছিল আজ বিজ্ঞানের সাধনায় তার সেই চেষ্টার পরিণতি। এই চেষ্টার মূল কথাটা হচ্ছে মানব না মানাব। ( PSC Clerk - 1999)
সারাংশ : বিশ্বঘটনার উপর কর্তৃত্ব করার সাধনায় মানুষের চেষ্টার মর্মকথা হলো না -মানা মানসিকতা। মানুষের সাথে জন্তুর প্রকৃত পার্থক্য হলো মানুষের এই না-মানার মনোভাব। পাওয়া না-পাওয়া ব্যাপারটা জন্তুরা বিনা তর্কে মেনে নিলেও মানুষের আদৌ সম্মতি নেই। বিজ্ঞান সাধনা হোক বা কোনো চেষ্টা সব কিছুর মূল কথা মেনে নেওয়া কিংবা মেনে না নেওয়া।
3) এমন কোনও সভ্য ভাষা নেই যে নানা জাতির সঙ্গে নানা ব্যবহারের ফলে বিদেশী শব্দ কিছু না কিছু আত্মসাৎ করে নি। বহুকাল মুসলমানের সংস্রবে থাকতে বাংলা ভাষাও অনেক পারসী শব্দ এবং কিছু কিছু আরবীও স্বভাবতই গ্রহণ করেছে। বস্তুত বাংলা ভাষা যে বাঙালি হিন্দু-মুসলমান উভয়েরই আপন তার স্বাভাবিক প্রমান ভাষার মধ্যে প্রচুর রয়েছে। যতো বড়ো নিষ্ঠাবান হিন্দুই হোক না কেন ঘোরতর রাগরাগির দিনেও প্রতিদিনের ব্যবহারে রাশি রাশি তৎসম ও তদ্ভব মুসলমানী শব্দ উচ্চারণ করতে কোনও সংকোচ বোধ হয় না। এমন কি, সে সকল শব্দের জায়গায় যদি সংস্কৃত প্রতিশব্দ চালানো যায় তাহলে পণ্ডিতী করা হচ্ছে বলে লোকে হাসবে। বাজারে এসে সহস্র টাকার নোট ভাঙানোর চেয়ে হাজার টাকার নোট ভাঙানো সহজ। সমনজারি শব্দের অর্ধেক অংশ ইংরেজি,অর্ধেক পারসী,এর জায়গায় 'আহ্বান প্রচার' শব্দ সাধু সাহিত্যেও ব্যবহার করবার মতো সাহস কোনও বিদ্যাভূষণের হবে না। নেশাখোর কে যদি মাদকসেবী বলে বসি তাহলে খামকা তার নেশা ছুটে যেতে পারে, এমনকি সে মনে করতে পারে তাকে একটা উচ্চ উপাধি দেওয়া হল । বদমায়েসকে দুবৃর্ত্ত বললে তার চোট তেমন বেশি লাগবে না। এই সব শব্দগুলো যে এত জোর পেয়েছে তার কারণ বাংলা ভাষা প্রাণের সঙ্গে এদের সহজে যোগ হয়েছে। (PSC Clerk - 2000)
সারাংশ : বাংলা সাহিত্যে নিজের ভাব প্রকাশের জন্য বিভিন্ন ভাষা থেকে প্রচুর শব্দ গৃহীত হয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলা ভাষার নিজস্ব শব্দের মধ্যে বাঙালির নাড়ির টান আছে,এক প্রানের যোগ রয়েছে। বাঙালি জাতির সাহিত্যের উন্নতি করতে গেলে বাংলা ভাষার চর্চা আবশ্যক।
4) বিদ্যার রাজ্যে বিদ্যাদান গ্রহণসাপেক্ষ। অথচ আমরা দাতার মুখ চেয়ে গ্রহীতার কথাটা একেবারেই ভুলে যাই। এ সত্য ভুলে না গেলে আমরা বুঝতাম যে শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদান করায় নয়, কিন্তু ছাত্রকে তা অর্জন করতে সক্ষম করায়। শিক্ষক ছাত্রকে শিক্ষার পথ দেখিয়ে দিতে পারেন, মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিতে পারেন, তার কৌতুহল উদ্রেক করতে পারেন,তার বুদ্ধিবৃত্তিকে জাগ্রত করতে পারেন,তার জ্ঞানপিপাসাকে জ্বলন্ত করতে পারেন,এর বেশি আর কিছু পারেন না। যিনি যথার্থ গুরু তার শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করতে পারেন এবং তার অন্তনির্হিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে যুক্ত ও ব্যক্ত করে তোলেন। সেই শক্তির বলে সে নিজের মন নিজে গড়ে তোলে নিজের মনের মতো বিদ্যা নিজে অর্জন করে। বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে করতে হয়। গুরু সাধক মাত্র। (PSC Clerk - 2002)
সারাংশ : একজন শিক্ষক হলেন প্রকৃত দাতা এবং ছাত্র সেই দান গ্রহণ করে। কিন্তু শিক্ষাকে আত্মস্থ করে নিতে হয়। প্রকৃত শিক্ষার চেতনার বৃদ্ধিদায়ক। অন্তরের সুপ্ত শক্তিকে জাগ্রত করে শিক্ষার্থী নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে,প্রকৃত শিক্ষিত হতে পারবে। সুতরাং শিক্ষার্থীকেই শিক্ষার সাধনায় মগ্ন হতে হবে, শিক্ষক শুধুই পথ প্রদর্শক।
5) সংসার আমাদের জীবনের সমস্ত কাজ গ্রহণ করে। কিন্তু আমাদিগকে তো গ্রহণ করে না। আমার চিরজীবনের ফসল যখন সংসারের নৌকায় বোঝাই করিয়া দিই তখন মনে এ আশা থাকে যে আমারও ওই সঙ্গে স্থান হইবে, কিন্তু সংসার আমাদের দুদিনেই ভুলিয়া যায়। একবার ভাবিয়া দেখো,কত লক্ষ কোটি বিস্মৃত মানবের জীবনপাতের উপর আমাদের প্রত্যেকের জীবন গঠিত। আমাদের আহার-বিহার,বসন-ভূষণ,ধর্ম-কর্ম,ভাষা-ভাব সমস্তই পূর্ববর্তী অসংখ্য মানবের বিস্মৃত কর্ম,বিস্মৃত চেষ্টার দ্বারাই বিধৃত। আমরা আগুন জ্বালাইয়া রাঁধি, যাহারা আগুন আবিষ্কার করিয়াছিল তাহাদিগকে কে জানে ? যাহারা চাষ আরম্ভ করিয়াছিল তাহাদের নামই বা কোথায়? যাহারা যুগে যুগে নানা ভাবে মানুষকে গড়িয়া তুলিয়াছে তাহাদের কাজ আমাদের মধ্যে অমর হইয়া আছে। কিন্তু তাহারা নামধাম সুখ দুঃখ লইয়া কোন বিস্মৃতির মধ্যে অন্তর্নিহিত হইয়াছে। আমাদের জীবনের ফসল কোন না কোন আকারে থাকিয়া যায়। কিন্তু আমরা থাকিব না । (PSC Clerk - 2003)
সারাংশ : মানুষের সকল কর্ম এই বিশ্বসংসার সাদরে গ্রহণ করে। এই বিশ্ব সংসার মানুষের স্থূল দেহকে ধরে রাখতে অক্ষম। জীবনের পরিসমাপ্তিতে স্ব-শরীরে না থাকলেও মানুষ তাঁর কর্মের মধ্য দিয়ে অমর হয়ে থাকে। মানুষের কর্মের ফসল ই আমরনকাল থেকে যায়।
6) অতি কাছে এসেছেন আজ বাঙলার কবি - এই প্রতিদিনের মানুষের সংসারে। সারা জীবনের ঐশ্বর্য তিনি যাদের উদ্দেশ্যে দিচ্ছেন তারা অতি বুদ্ধিমান জ্ঞানের ব্যবসায়ী নয়, তারা শ্যামল দিগন্তে ঘেরা প্রাত্যহিক মানুষ। রবীন্দ্রনাথের কাব্যে অধিকারী ভেদ নেই, এখানে সকলেরই নিমন্ত্রণ। মাঝি এল তার পালতোলা নৌকা নিয়ে গঞ্জের হাট থেকে লোক এল বিবিধ পসরা হাতে করে - কেউ হালে বলদ জুড়ছে,কেউ বা শহরে কাজ করে - দোকানে বা কত ঘরের নিভৃত কাহিনী জীবনের ধ্যানমালায় গ্রথিত হল তার আজকের কবিতায়। এই সংবেদনশীল দৃষ্টিতে সত্যাদর্শীতার সাহস আরও প্রদীপ্ত হয়েছে, আর পরিচয় পেয়েছি তাঁর এই নববর্ষের অভিভাষণে। ভয়হীন তাঁর দৃষ্টি, কেন না সেখানে প্রেমের অপরাজেয় শক্তি রয়েছে - মানুষকে ভালোবাসেন বলেই তিনি মানুষের ভ্রষ্টতাকে এমন করে মোহমুক্ত দৃষ্টিতে দেখতে পারেন। (PSC Clerk - 2004)
সারাংশ : বর্তমানে বাংলার কবিগণ প্রতিটি মানুষের সংসার জীবনে প্রবেশ করেছে। এই সকল কবিদের লেখায় আছে শুধু আমন্ত্রণ,গ্রহণ ও সমন্বয় ,নেই কোনো ভেদভেন,বঞ্চনা। তাঁদের সংবেদনশীল রচনায় সত্যাদর্শিতার সাহস, প্রেমের অপরাজেয় শক্তি ও মনুষের ভালোবাসার প্রকৃষ্ট নিদর্শন পাওয়া যায়।
7) পরকে আপন করিতে প্রতিভার প্রয়োজন। অন্যের মধ্যে প্রবেশ করিবার শক্তি এবং অন্যকে সম্পূর্ণ আপনার করিবার লইবার ইন্দ্রজাল,ইহাই প্রতিভার নিজস্ব। ভারতবর্ষের মধ্যে সে প্রতিভা আমরা দেখিতে পাই। ভারতবর্ষ অসংকোচে অন্যের মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে এবং অনায়াসে অন্যের সামগ্রী নিজের করিয়া লইয়াছে। ভারতবর্ষ পুলিন্দ,শবর,ব্যাধ প্রভৃতির নিকট হইতেও বীভৎস গ্রহণ করিয়া তাহার মধ্যে নিজের ভাব বিস্তার করিয়াছে - তাহার মধ্য দিয়াও নিজের আধ্যাত্মিকতাকে অভিব্যক্ত করিয়াছে। ভারতবর্ষ কিছুই ত্যাগ করে নাই এবং গ্রহণ করিয়া সকলই আপনার করিয়াছে। ( PSC Clerk - 2006)
সারাংশ : ভারতের বড়ো বৈশিষ্ট্য হলো পরকে আপন করে নেবার ধর্ম। এ দেশ নিঃসংকোচে অন্যের কাছ থেকে অনেক কিছু গ্রহণ করেছে এবং অন্যের মধ্যে নিজের ভাব-বিশিষ্টতার বিস্তার ঘটিয়েছে।দেওয়া আর নেওয়া এই প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্যই এদেশের সভ্যতাকে সমন্বয় সাধনের এক মহান আদর্শে গড়ে তুলেছে।
8) বাল্যকাল হইতেই আমাদের শিক্ষার সহিত আনন্দ নাই। কেবল যাহা নিতান্ত আবশ্যক তাহাই কণ্ঠস্থ করিতেছি। তেমন করিয়া কোন মতে কাজ চলে মাত্র,কিন্তু মনের বিকাশ লাভ হয় না। হাওয়া খাইলে পেট ভরে না,আহার করিলে পেট ভরে, কিন্তু আহারাদি রীতিমত হজম করিবার জন্য হাওয়া খাওয়া দরকার। তেমনি একটি শিক্ষা-পুস্তককে রীতিমত হজম করিতে অনেকগুলি পাঠ্যপুস্তকের সাহায্য আবশ্যক। আনন্দের সহিত পড়িতে পড়তে পড়িবার শক্তি অলক্ষিতভাবে বৃদ্ধি পাইতে থাকে; গ্রহণ-শক্তি,ধারণা-শক্তি, চিন্তা-শক্তি,বেশ সহজে এবং স্বাভাবিক নিয়মে বল লাভ করে।
( PSC Clerk - 2007)
সারাংশ : ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনচর্যার সহায়তা করাই শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত। কিন্তু পুঁথি সর্বস্ব বিদ্যা মানুষকে সংকীর্ণগন্ডির মধ্যে এনে শিক্ষার প্রকৃত আনন্দ থেকে বিছন্ন করে দেয়। মানুষের অন্তরে অন্তর্নিহিত জ্ঞানের বিকাশ ও প্রকাশের শিক্ষা মানুষকে গ্রহণ শক্তি,সহমর্মী,জ্ঞানী এবং স্থিতধী করে তোলে ।
সারাংশ : মহান আবিস্কারক বিজ্ঞানী নিউটনের মধ্যেই মধ্যাকর্ষণ শক্তি নিহিত ছিল। বাইরের জগৎ শুধু মনকে পর্যবেক্ষণ করতে উদ্দীপিত করেছিল। মানুষের মনের অন্তরেই আবিষ্কার,সৃষ্টি,জ্ঞান সব কিছু অবস্থান করে, বাইরের নানা আবরণ তাকে আবৃত্ত করে। বাইরের আবরণ অপসারিত হলেই জ্ঞানের প্রকাশ ঘটে। জ্ঞানের এই প্রকাশ ও বিকাশই প্রকৃত শিক্ষা এবং আবিষ্কার
2) জন্তুরা আহার পায় বাঁচে, আঘাত পায় মরে,যেটাকে পায় সেটাকেই বিনা তর্কে মেনে নেয়। কিন্তু মানুষের সবচেয়ে বড়ো স্বভাব হচ্ছে মেনে না নেওয়া। জন্তুরা বিদ্রোহী নয়, মানুষ বিদ্রোহী। বাইরে থেকে যা ঘটে,যাতে তাঁর নিজের কোনো হাত নেই, কোনো সায় নেই, সেই ঘটনাকে মানুষ একেবারে চূড়ান্ত বলে স্বীকার করেনি বলেই জীবের ইতিহাসে সে আজ এত বড়ো গৌরবের পদ দখল করে বসেছে। আসল কথা, মানুষ একেবারেই ভালো মানুষ নয়। ইতিহাসে আদিকাল থেকে মানুষ বলেছে, বিশ্বঘটনার উপর সে কর্তৃত্ব করবে । কেমন করে করবে ? না, ঘটনার পিছনে যে প্রেরণা আছে, যার থেকে ঘটনাগুলো বেরিয়ে এসেছে, তারই সঙ্গে কোনোমতে যদি রফা করতে বা তাকে বাধ্য করতে পারে, তা হলেই সে আর ঘটনার দলে থাকবে না,ঘটয়িতার দলে গিয়ে ভর্তি হবে। সাধনা আরম্ভ করলে মন্ত্রতন্ত্র নিয়ে। গোড়ায় তার বিশ্বাস ছিল,জগতে যা কিছু ঘটছে এ সমস্তই একটা জাদুশক্তির জোরে। সেই জাদুমন্ত্রের সাধনায় মানুষ সে চেষ্টা শুরু করেছিল আজ বিজ্ঞানের সাধনায় তার সেই চেষ্টার পরিণতি। এই চেষ্টার মূল কথাটা হচ্ছে মানব না মানাব। ( PSC Clerk - 1999)
সারাংশ : বিশ্বঘটনার উপর কর্তৃত্ব করার সাধনায় মানুষের চেষ্টার মর্মকথা হলো না -মানা মানসিকতা। মানুষের সাথে জন্তুর প্রকৃত পার্থক্য হলো মানুষের এই না-মানার মনোভাব। পাওয়া না-পাওয়া ব্যাপারটা জন্তুরা বিনা তর্কে মেনে নিলেও মানুষের আদৌ সম্মতি নেই। বিজ্ঞান সাধনা হোক বা কোনো চেষ্টা সব কিছুর মূল কথা মেনে নেওয়া কিংবা মেনে না নেওয়া।
3) এমন কোনও সভ্য ভাষা নেই যে নানা জাতির সঙ্গে নানা ব্যবহারের ফলে বিদেশী শব্দ কিছু না কিছু আত্মসাৎ করে নি। বহুকাল মুসলমানের সংস্রবে থাকতে বাংলা ভাষাও অনেক পারসী শব্দ এবং কিছু কিছু আরবীও স্বভাবতই গ্রহণ করেছে। বস্তুত বাংলা ভাষা যে বাঙালি হিন্দু-মুসলমান উভয়েরই আপন তার স্বাভাবিক প্রমান ভাষার মধ্যে প্রচুর রয়েছে। যতো বড়ো নিষ্ঠাবান হিন্দুই হোক না কেন ঘোরতর রাগরাগির দিনেও প্রতিদিনের ব্যবহারে রাশি রাশি তৎসম ও তদ্ভব মুসলমানী শব্দ উচ্চারণ করতে কোনও সংকোচ বোধ হয় না। এমন কি, সে সকল শব্দের জায়গায় যদি সংস্কৃত প্রতিশব্দ চালানো যায় তাহলে পণ্ডিতী করা হচ্ছে বলে লোকে হাসবে। বাজারে এসে সহস্র টাকার নোট ভাঙানোর চেয়ে হাজার টাকার নোট ভাঙানো সহজ। সমনজারি শব্দের অর্ধেক অংশ ইংরেজি,অর্ধেক পারসী,এর জায়গায় 'আহ্বান প্রচার' শব্দ সাধু সাহিত্যেও ব্যবহার করবার মতো সাহস কোনও বিদ্যাভূষণের হবে না। নেশাখোর কে যদি মাদকসেবী বলে বসি তাহলে খামকা তার নেশা ছুটে যেতে পারে, এমনকি সে মনে করতে পারে তাকে একটা উচ্চ উপাধি দেওয়া হল । বদমায়েসকে দুবৃর্ত্ত বললে তার চোট তেমন বেশি লাগবে না। এই সব শব্দগুলো যে এত জোর পেয়েছে তার কারণ বাংলা ভাষা প্রাণের সঙ্গে এদের সহজে যোগ হয়েছে। (PSC Clerk - 2000)
সারাংশ : বাংলা সাহিত্যে নিজের ভাব প্রকাশের জন্য বিভিন্ন ভাষা থেকে প্রচুর শব্দ গৃহীত হয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলা ভাষার নিজস্ব শব্দের মধ্যে বাঙালির নাড়ির টান আছে,এক প্রানের যোগ রয়েছে। বাঙালি জাতির সাহিত্যের উন্নতি করতে গেলে বাংলা ভাষার চর্চা আবশ্যক।
4) বিদ্যার রাজ্যে বিদ্যাদান গ্রহণসাপেক্ষ। অথচ আমরা দাতার মুখ চেয়ে গ্রহীতার কথাটা একেবারেই ভুলে যাই। এ সত্য ভুলে না গেলে আমরা বুঝতাম যে শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদান করায় নয়, কিন্তু ছাত্রকে তা অর্জন করতে সক্ষম করায়। শিক্ষক ছাত্রকে শিক্ষার পথ দেখিয়ে দিতে পারেন, মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিতে পারেন, তার কৌতুহল উদ্রেক করতে পারেন,তার বুদ্ধিবৃত্তিকে জাগ্রত করতে পারেন,তার জ্ঞানপিপাসাকে জ্বলন্ত করতে পারেন,এর বেশি আর কিছু পারেন না। যিনি যথার্থ গুরু তার শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করতে পারেন এবং তার অন্তনির্হিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে যুক্ত ও ব্যক্ত করে তোলেন। সেই শক্তির বলে সে নিজের মন নিজে গড়ে তোলে নিজের মনের মতো বিদ্যা নিজে অর্জন করে। বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে করতে হয়। গুরু সাধক মাত্র। (PSC Clerk - 2002)
সারাংশ : একজন শিক্ষক হলেন প্রকৃত দাতা এবং ছাত্র সেই দান গ্রহণ করে। কিন্তু শিক্ষাকে আত্মস্থ করে নিতে হয়। প্রকৃত শিক্ষার চেতনার বৃদ্ধিদায়ক। অন্তরের সুপ্ত শক্তিকে জাগ্রত করে শিক্ষার্থী নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে,প্রকৃত শিক্ষিত হতে পারবে। সুতরাং শিক্ষার্থীকেই শিক্ষার সাধনায় মগ্ন হতে হবে, শিক্ষক শুধুই পথ প্রদর্শক।
5) সংসার আমাদের জীবনের সমস্ত কাজ গ্রহণ করে। কিন্তু আমাদিগকে তো গ্রহণ করে না। আমার চিরজীবনের ফসল যখন সংসারের নৌকায় বোঝাই করিয়া দিই তখন মনে এ আশা থাকে যে আমারও ওই সঙ্গে স্থান হইবে, কিন্তু সংসার আমাদের দুদিনেই ভুলিয়া যায়। একবার ভাবিয়া দেখো,কত লক্ষ কোটি বিস্মৃত মানবের জীবনপাতের উপর আমাদের প্রত্যেকের জীবন গঠিত। আমাদের আহার-বিহার,বসন-ভূষণ,ধর্ম-কর্ম,ভাষা-ভাব সমস্তই পূর্ববর্তী অসংখ্য মানবের বিস্মৃত কর্ম,বিস্মৃত চেষ্টার দ্বারাই বিধৃত। আমরা আগুন জ্বালাইয়া রাঁধি, যাহারা আগুন আবিষ্কার করিয়াছিল তাহাদিগকে কে জানে ? যাহারা চাষ আরম্ভ করিয়াছিল তাহাদের নামই বা কোথায়? যাহারা যুগে যুগে নানা ভাবে মানুষকে গড়িয়া তুলিয়াছে তাহাদের কাজ আমাদের মধ্যে অমর হইয়া আছে। কিন্তু তাহারা নামধাম সুখ দুঃখ লইয়া কোন বিস্মৃতির মধ্যে অন্তর্নিহিত হইয়াছে। আমাদের জীবনের ফসল কোন না কোন আকারে থাকিয়া যায়। কিন্তু আমরা থাকিব না । (PSC Clerk - 2003)
সারাংশ : মানুষের সকল কর্ম এই বিশ্বসংসার সাদরে গ্রহণ করে। এই বিশ্ব সংসার মানুষের স্থূল দেহকে ধরে রাখতে অক্ষম। জীবনের পরিসমাপ্তিতে স্ব-শরীরে না থাকলেও মানুষ তাঁর কর্মের মধ্য দিয়ে অমর হয়ে থাকে। মানুষের কর্মের ফসল ই আমরনকাল থেকে যায়।
6) অতি কাছে এসেছেন আজ বাঙলার কবি - এই প্রতিদিনের মানুষের সংসারে। সারা জীবনের ঐশ্বর্য তিনি যাদের উদ্দেশ্যে দিচ্ছেন তারা অতি বুদ্ধিমান জ্ঞানের ব্যবসায়ী নয়, তারা শ্যামল দিগন্তে ঘেরা প্রাত্যহিক মানুষ। রবীন্দ্রনাথের কাব্যে অধিকারী ভেদ নেই, এখানে সকলেরই নিমন্ত্রণ। মাঝি এল তার পালতোলা নৌকা নিয়ে গঞ্জের হাট থেকে লোক এল বিবিধ পসরা হাতে করে - কেউ হালে বলদ জুড়ছে,কেউ বা শহরে কাজ করে - দোকানে বা কত ঘরের নিভৃত কাহিনী জীবনের ধ্যানমালায় গ্রথিত হল তার আজকের কবিতায়। এই সংবেদনশীল দৃষ্টিতে সত্যাদর্শীতার সাহস আরও প্রদীপ্ত হয়েছে, আর পরিচয় পেয়েছি তাঁর এই নববর্ষের অভিভাষণে। ভয়হীন তাঁর দৃষ্টি, কেন না সেখানে প্রেমের অপরাজেয় শক্তি রয়েছে - মানুষকে ভালোবাসেন বলেই তিনি মানুষের ভ্রষ্টতাকে এমন করে মোহমুক্ত দৃষ্টিতে দেখতে পারেন। (PSC Clerk - 2004)
সারাংশ : বর্তমানে বাংলার কবিগণ প্রতিটি মানুষের সংসার জীবনে প্রবেশ করেছে। এই সকল কবিদের লেখায় আছে শুধু আমন্ত্রণ,গ্রহণ ও সমন্বয় ,নেই কোনো ভেদভেন,বঞ্চনা। তাঁদের সংবেদনশীল রচনায় সত্যাদর্শিতার সাহস, প্রেমের অপরাজেয় শক্তি ও মনুষের ভালোবাসার প্রকৃষ্ট নিদর্শন পাওয়া যায়।
7) পরকে আপন করিতে প্রতিভার প্রয়োজন। অন্যের মধ্যে প্রবেশ করিবার শক্তি এবং অন্যকে সম্পূর্ণ আপনার করিবার লইবার ইন্দ্রজাল,ইহাই প্রতিভার নিজস্ব। ভারতবর্ষের মধ্যে সে প্রতিভা আমরা দেখিতে পাই। ভারতবর্ষ অসংকোচে অন্যের মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে এবং অনায়াসে অন্যের সামগ্রী নিজের করিয়া লইয়াছে। ভারতবর্ষ পুলিন্দ,শবর,ব্যাধ প্রভৃতির নিকট হইতেও বীভৎস গ্রহণ করিয়া তাহার মধ্যে নিজের ভাব বিস্তার করিয়াছে - তাহার মধ্য দিয়াও নিজের আধ্যাত্মিকতাকে অভিব্যক্ত করিয়াছে। ভারতবর্ষ কিছুই ত্যাগ করে নাই এবং গ্রহণ করিয়া সকলই আপনার করিয়াছে। ( PSC Clerk - 2006)
সারাংশ : ভারতের বড়ো বৈশিষ্ট্য হলো পরকে আপন করে নেবার ধর্ম। এ দেশ নিঃসংকোচে অন্যের কাছ থেকে অনেক কিছু গ্রহণ করেছে এবং অন্যের মধ্যে নিজের ভাব-বিশিষ্টতার বিস্তার ঘটিয়েছে।দেওয়া আর নেওয়া এই প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্যই এদেশের সভ্যতাকে সমন্বয় সাধনের এক মহান আদর্শে গড়ে তুলেছে।
8) বাল্যকাল হইতেই আমাদের শিক্ষার সহিত আনন্দ নাই। কেবল যাহা নিতান্ত আবশ্যক তাহাই কণ্ঠস্থ করিতেছি। তেমন করিয়া কোন মতে কাজ চলে মাত্র,কিন্তু মনের বিকাশ লাভ হয় না। হাওয়া খাইলে পেট ভরে না,আহার করিলে পেট ভরে, কিন্তু আহারাদি রীতিমত হজম করিবার জন্য হাওয়া খাওয়া দরকার। তেমনি একটি শিক্ষা-পুস্তককে রীতিমত হজম করিতে অনেকগুলি পাঠ্যপুস্তকের সাহায্য আবশ্যক। আনন্দের সহিত পড়িতে পড়তে পড়িবার শক্তি অলক্ষিতভাবে বৃদ্ধি পাইতে থাকে; গ্রহণ-শক্তি,ধারণা-শক্তি, চিন্তা-শক্তি,বেশ সহজে এবং স্বাভাবিক নিয়মে বল লাভ করে।
( PSC Clerk - 2007)
সারাংশ : ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনচর্যার সহায়তা করাই শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত। কিন্তু পুঁথি সর্বস্ব বিদ্যা মানুষকে সংকীর্ণগন্ডির মধ্যে এনে শিক্ষার প্রকৃত আনন্দ থেকে বিছন্ন করে দেয়। মানুষের অন্তরে অন্তর্নিহিত জ্ঞানের বিকাশ ও প্রকাশের শিক্ষা মানুষকে গ্রহণ শক্তি,সহমর্মী,জ্ঞানী এবং স্থিতধী করে তোলে ।
File Details :
File Type : PDF
File Name : Previous Year Bengali Precis
File Size : 400 kb
Click Here To Download
🔷 বিগত বছরের আরো কিছু পোস্ট দেখুন :

0 Comments
Please do not share any spam link in the comment box